হরমোন ঘাটতিজনিত সমস্যা কেবল নারীদের নয়, পুরুষেরও দেখা দিতে পারে। যে কোনো নারীর ক্ষেত্রে হরমোন তৈরির গ্রন্থি (ফিমেল গোনাডস) যদি স্ত্রী-যৌন হরমোন উৎপাদন করতে ব্যর্থ হয় বা কম পরিমাণে উৎপাদন করে অথবা কোনো কারণে পুরুষ-যৌন হরমোন বেশি পরিমাণে উৎপাদন করে বা পুরুষ ও স্ত্রী যৌন হরমোনের পরিমাণের সমন্বয় বিনষ্ট হয়, তাহলে ফিমেল হাইপোগোনাডিজম হতে পারে।
উপসর্গ : বয়ঃসন্ধিকালের আগেই কোনো কোনো বালিকার ফিমেল হাইপোগোনাডিজম দেখা দিতে পারে। অনেকের বয়ঃসন্ধিকাল পার হয়ে মাসিক চলতে চলতে কোনো এক সময় হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এমন হলে গরম বাতাসের ঝাপটা বা হঠাৎ করে বেশি ঘাম হওয়া, মানসিক উত্তেজনা কিংবা মেজাজ খারাপ হওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়। কোনো কিশোরীর যথার্থ সময়ের আগেই স্ত্রী-যৌন হরমোন কমে গেলে জীবনের একটি চরম বিপর্যয়কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। কোনোদিন সে সন্তান জন্ম দিতে পারবে না। একইভাবে স্বাভাবিক নারীসুলভ দৈহিক ও মানসিক অবস্থা হারানোর ফলে বিপর্যয় ঘটতে পারে যৌনজীবনের। দাম্পত্য ও পারিবারিক জীবনে কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। শারীরিক বা মানসিক যে লক্ষণই দেখা দিক না কেন, ফিমেল হাইপোগোনাডিজম শনাক্ত করতে রোগীর স্ত্রী-যৌন হরমোনের ঘাটতির প্রমাণ থাকা উচিত। কোনো নারী যদি এ রকম শারীরিক ও মানসিক সমস্যা অনুভব করেন, তাহলে অতি দ্রুত কোনো হরমোন বিশেষজ্ঞের (এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট) শরণাপন্ন হওয়া জরুরি। তিনি লক্ষণগুলো পর্যালোচনা করে শারীরিক পরীক্ষা, রক্ত পরীক্ষা (হরমোনের পরিমাণ নির্ধারণের জন্য), পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাম বা মস্তিষ্কের এমআরআই করতে পারেন।
চিকিৎসা : রোগীর কত বয়সে ফিমেল হাইপোগোনাডিজম দেখা দিয়েছে, কোন ধরনের ফিমেল হাইপোগোনাডিজম হয়েছে, তার সন্তান আছে কী-নেই, আরও সন্তান নিতে চান কিনা- এসবই নির্ধারণে প্রভাব ফেলবে। ফিমেল হাইপোগোনাডিজমে আক্রান্তের উপরের অবস্থাগুলো বিবেচনা করে বাইরে থেকে স্ত্রী-যৌন হরমোন ইনজেকশন বা ট্যাবলেট দেওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে জন্মবিরতিকরণ ট্যাবলেটও কাজে লাগতে পারে। তবে ওষুধের সঙ্গে মানসিক দিকটা গুরুত্ব দিতে হবে।
ডা. শাহজাদা সেলিম হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ।
কমেন্টস করুন